নোটিশ :
hathazarinews.com ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম...
সংবাদ শিরোনাম:
ফরহাদাবাদে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার কে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে: উপদেষ্টা ফারুক ই আজম হাটহাজারীতে আগুনে পুড়লো ৪ পরিবারের বসতঘর পণ্ডিত স্বর্ণময় চক্রবর্তীর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন হাটহাজারীতে বন্যা দূর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার  ফরহাদাবাদের বংশালে বন্যা কবলিত ভাইকে দেখতে গিয়ে বোনের মৃত্যু ফরহাদাবাদে মধ্যে রাতে বন্যার পানি ঘরে: মালামাল বের করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট যুবক নিহত হাটহাজারীতে নির্মাণাধীন ভবনে পড়েছিল ব্যবসায়ীর লাশ বীর মুক্তিযোদ্ধা এলএমজি মাহাবুর ইন্তেকাল  নরমাল ডেলিভারিতে ৮ নবজাতকের জন্ম হাটহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রবিবার থেকেই হাটহাজারী মডেল থানার পুলিশি কার্যক্রম শুরু: ওসি মনিরুজ্জামান 
বৃষ্টির অপেক্ষায় হালদা ও হ্যাচারিরা: মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডে হুমকির মুখে হালদা!

বৃষ্টির অপেক্ষায় হালদা ও হ্যাচারিরা: মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডে হুমকির মুখে হালদা!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ খ্যাত হালদা নদী একটি অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র। প্রতিবছর এই হালদা নদীতে এপ্রিল-জুন মাসে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার তিথিতে বজ্রপাতসহ পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিতে মা মাছ ডিম ছাড়ে।কিন্তু এবার এপ্রিল মাস শেষ হওয়ার পরও বৃষ্টি না পড়ার কারণ হালদায় মা মাছ ডিম ছাড়েনি। তাই বৃষ্টির অপেক্ষা হালদার মা মাছ এবং সেই মহামূল্যবান মাছের ডিমের জন্য নৌকা নিয়ে প্রস্তুত ডিম সংগ্রহকারী হ্যাচারিরা।

বিজ্ঞাপন

এদিকে যথা সময়ে হালদায় মা মাছ ডিম না ছাড়া এবং  বৃষ্টি না হওয়ার জন্য মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড যেমন:- দূষণ, জাল, বড়শি ও বিষ দিয়ে অবৈধ মৎস্য শিকার, অবৈধ বালু উত্তোলন, চরকাঁটা, হালদার উজানে ভুজপুর ও হারুয়ালছড়ি রাবার ড্যাম, ধুরুং খালের উপর কনক্রিট ড্যাম, হালদা ও এর বিভিন্ন শাখাখালসমুহ পলি জমে ভরাট ইত্যাদি কারণে হালদার স্বাস্হ্য ব্যবস্থা তথা জলজ পরিবেশ আজ হুমকির সম্মুখীন বলে জানান চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ এর জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও হালদা গবেষক ড.মো. শফিকুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, পাহাড়ী ঢল নেমে পানিতে তীব্র স্রোত সৃষ্টি করে এবং পানির তাপমাত্রা কমে (২৭-২৯) ডিগ্রী সেলসিয়াস ও বিভিন্ন ভৌত ও রাসায়নিক প্যারামিটারের মিত্রস্ক্রিয়তায় হালদা নদীতে কার্পজাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার প্রাকৃতিক অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি হলেই কেবল মা মাছ ডিম ছাড়ে। গড়ে ৫০০-৬০০ জন স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারী এসব ডিম সংগ্রহ করে মাটির তৈরি কূয়া বা হ্যাচারীতে ফুটিয়ে উন্নত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পোনা উৎপাদন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এমন বৈরি আবহাওয়ার প্রভাবে বিগত দুই বছর (২০২১ ও ২০২২) হালদা থেকে সংগৃহীত ডিমের পরিমাণ ব্যাপকহারে কমেছে। বর্তমানে হালদা নদীতে চলছে মেজর কার্পজাতীয় মাছের ভরা প্রজনন মৌসুম। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট উচ্চ তাপমাত্রা ও ব্রজসহ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় হালদা নদীতে ডিম ছাড়ার অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় চলতি মাসের (১৮-২২ এপ্রিল) সাম্ভাব্য অমাবস্যার জো’তে ডিম ছাড়েনি মা মাছ। মেজর কার্পজাতীয় মাছের অত্যানুকুল তাপমাত্রা হচ্ছে (২২-৩০) ডিগ্রী সেলসিয়াস তবে এরা অল্প সময়ের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। মেজর কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন আচরণ পানির তাপমাত্রার সাথে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, হালদা নদীর সাত্তারঘাট থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত স্পনিং গ্রাউন্ডের বিভিন্ন অংশ (সাত্তারঘাট, অঙ্গুরীঘোনা, আজিমারঘাট, নাপিতেরঘাট, আমতুয়া, রামদাসমুন্সির ঘাট ও মদুনাঘাট) থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে সরাসরি হালদা নদীতে ও বাসার নিজস্ব হালদা ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা যায় পানির বিভিন্ন ভৌত ও রাসায়নিক প্যারামিটারের (দ্রবীভুত অক্সিজেন, পিএইচ, কার্বনডাই-অক্সাইড, ক্যালসিয়াম, ট্র্যান্সপারেন্সি, খরতা, ও ক্ষারকত্ব ইত্যাদি) মান আদর্শ মানের মধ্যে রয়েছে।

তবে কার্পজাতীয় মাছের প্রজননের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্যারামিটার যেমন পানির তাপমাত্রা (৩২.৪- ৩৩.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস, আদর্শ মান: ২০-৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস) এবং লবণাক্ততা (০.২-১.৫ পিপিটি, আদর্শ মান: ০.৫ পিপিটি), টিডিএস (১৯০-১৫০৭ পিপিএম, আদর্শ মান-১০০০ পিপিএম), এবং ইলেকট্রিক্যাল কনডাক্টিভিটি (৩৭৯-৩০১৩ মাইক্রোসিমেন্স/সেন্টিমিটার, আদর্শ মান-৩৫০ মাইক্রোসিমেন্স/সেন্টিমিটার) আদর্শ মান অতিক্রম করেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট সাময়িক এই তাপমাত্রা ও সামান্য লবণাক্ততা হালদায় কার্পজাতীয় মাছের প্রজননে খুব বেশি প্রভাব ফেলবেনা। কারণ মেজরকার্প জাতীয় মাছ সর্বোচ্চ ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা এবং সহজে ৫ পিপিটি এমনকি সর্বোচ্চ ১৪ পিপিটি পর্যন্ত লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হলে বিদ্যমান উচ্চ তাপমাত্রা, সামান্য লবণাক্ততা ও অন্যান্য প্যারামিটারসমুহ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে৷ বর্তমানে হালদা নদীর বিভিন্ন স্পনিং পয়েন্টে মা মাছের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। পরিবেশ অনুকুলে থাকলে অর্থাৎ বজ্রপাতসহ পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢল নেমে আসে তাহলে আগামী পূর্ণিমার জো’তে অর্থাৎ মে মাসের প্রথম সপ্তাহে (২-৭) তারিখ হালদা নদীতে মেজর কার্পজাতীয় মা মাছের ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন




সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত,© এই সাইডের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ServerNeed.com